বিংশ শতকের বিশ্বের বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন মানবতাবাদী এবং বিজ্ঞান ও গণিত শাস্ত্র বিশারদ এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্য বার্ট্রান্ড রাসেল ৷ ১৯৫০ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন এবং পরে বৃটেনের সর্বোচ্চ বেসামরিক উপাধি ‘ অর্ডার অব মেরিট ’ ও তাকে প্রদান করা হয় ৷ তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধবিরোধী বিশ্বজনমত গঠনে নিজের মতামত প্রকাশ করে নিবন্ধ লিখার অপরাধে ১৯১৮ সালে দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করতে হয়েছে তার ৷ কিত্তু বার্ট্রান্ড রাসেলের জ্ঞানের গভীরতা ছিল অতুলনীয় ও অপরিমেয় ৷ তার রচিত বিশ্ব বিখ্যাত গ্রন্থ সমূহের অন্যতম ছিল Why I am not a Christian গ্রন্থটি ৷ রাসেল একজন মানবতাবাদী ব্যক্তিও ছিলেন ৷ তাই বিশ্বব্যাপী সহিংসতা , অন্যায় ,অবিচার , বৈষম্য , শাসকের হাতে শাসিতের অত্যাচার ,উৎপীড়ন ,শোষণ ,বঞ্চনা ; ব্যাক্তিমানুষের অজ্ঞতা , কুসংস্কার , ধর্মান্ধতা ও যুক্তিহীনতার বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন এবং উচ্চকণ্ঠে এসবের প্রতিবাদ করেছেন এবং নিজেও ব্যক্তিগতভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন ৷
কিত্তু ব্যক্তিগত দাম্পত্য জীবনে তিনি প্রথম দিকে শান্তি পান নাই ৷ ৮০ বছর বয়সে তিনি যখন ৪র্থ বিয়ে করেন তখন থেকে পরবর্তি ১৮ বছর তিনি সংসার জীবনে যথেষ্ট সুখ ও শান্তিতে ছিলেন ৷এরই প্রেক্ষাপটে তার ঐ স্ত্রী এডিথের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করে একটি কালজয়ী কবিতা লিখে গেছেন ৷ এই কবিতাটি দিয়েই তার আত্মজীবনী লিখা আরম্ভ করেছেন ৷
বার্ট্রেন্ড রাসেলের ব্যক্তি পরিচয় হচ্ছে -তিনি ১৮৭২ সালের ১৮ মে ব্রিটেনের ওয়েলস -এর ট্রেলেক নামক স্থানে জন্ম গ্রহণ করেন এবং চার বছর বয়সের মধ্যেই পিতা ও মাতা হারিয়ে পিতামহ ও পিতামহীর কাছে মানুষ হন ৷অবশ্য তার পিতামহও তার ৬ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন । পরে পিতামহী তারে মানুষ করেছিলেন ৷ ইংলেন্ডের এক ঐতিহ্যমন্ডিত পরিবারের বংশধর রাসেলের পিতামহ লর্ড জন রাসেল উনিশ শতকের মধ্যভাগে দুইবার ইংল্যাণ্ডের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ৷
রাসেল ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ থেকে গণিত ও দর্শনশাস্ত্রে প্রথম শ্রেণী অর্জন করেন এবং ৩১ বছর বয়স থেকে বিশ্বমানের গ্রন্থসমূহ রচনা আরম্ভ করেন ৷
১৮৯৪ সালে ২২ বছর বয়সে এ্যালিস পিয়ারসল স্মীথ কে বিয়ে করেন এবং ১৭ বছর তার সঙ্গে সংসার করার পর তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে ৷ পরে ১৯২১ সালে ডোরা উইনফ্রেড ব্ল্যাককে বিয়ে করেন ৷ সে বিয়ে বেশীদিন ঠিকেনি ৷ তাই ১৯৩৫ সালে মিস প্যাট্রিসিয়া স্পেন্স নামক মহিলার সঙ্গে বিয়ে হয় ৷ কিত্তু তৃতীয় বারের মত এই দাম্পত্য জীবনও রাসেলের টিকে নি ৷ শেষ পর্যন্ত ৮০ বছর বয়সে ১৯৫২ সালে এডিথ ফিন্সকে বিয়ে করেন এবং তাকে নিয়ে তার জীবনের শেষদিন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও সুখের দাম্পত্য জীবন যাপন করেন এবং ১৮ বছর সুখের সংসার যাপনের পর ৯৮ বছর বয়সে ১৯৭০ সালের ২ ফেব্রুয়ারী বার্ট্রেন্ড রাসেল মৃত্যুকে বরণ করেন ৷
রাসেলের প্রস্তাবিত “Ten Commandments”
(গত শতাব্দীর সর্বর্শেষ্ঠ ভাবুক বার্টান্ড রাসেলের “A Liberal Decalogue” রচনাটির অনুবাদ। একজন উদারপন্থীর নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা উচিত বলে রাসেল মনে করেন।)
১. কোন ব্যাপারেই পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ো না।
২. চিন্তন প্রক্রিয়ায় কখনোই ‘প্রমাণ’ গোপন করার চেষ্টা করো না, কারণ প্রমাণকে চিরদিন লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
৩. ‘চিন্তা’ করার মানসিকতাকে কখনো নিরুৎসাহিত করো না, কারণ একমাত্র ‘চিন্তা’র মাধ্যমেই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব।
৪. যখনই তুমি বিরোধিতার মুখোমুখি হবে, এমনকি বিরোধীপক্ষ যদি তোমার স্বামী বা সন্তানও হয়, যুক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা কর, কতৃত্বপ্রয়োগের মাধ্যমে নয়।
৫. অন্যের ‘কতৃত্ব’-র উপর বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাবোধ রেখো না, কারণ সবসময়ই পরস্পরবিরোধী কতৃত্বের দেখা মেলে।
৬. যেসব মতামত তোমার কাছে ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হয়, তাদেরকে কখনোই বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দমন করার চেষ্টা করো না; কারণ যদি তুমি তা করো তাহলে ওই মতামতগুলোই তোমাকে দমন করে ফেলবে।
৭. তোমার চিন্তাভাবনা ‘অদ্ভূত’ বলে ভীত হয়ো না, কারণ বর্তমানে প্রচলিত সমস্ত চিন্তাভাবনাই একসময় ‘অদ্ভূত’ ছিল।
৮. অপ্রত্যক্ষভাবে মতৈক্যে না পৌছে ভিন্নমত পোষণ করো।
৯. সত্যবাদী হও, এমনকি যদি সত্যটি অপ্রীতিকর হয় তারপরও; কারণ সত্য প্রকাশ করার চেয়ে সত্য লুকিয়ে রাখার চেষ্টাটি আরো বেশি অপ্রীতিকর।
১০. বোকার স্বর্গে বাস করাদের সুখ দেখে হিংসা করো না, কারণ ওই অবস্থাকে সুখ ভাবা একমাত্র ‘বোকা’দের পক্ষেই সম্ভব।
বিবাহ হচ্ছে নারীর জন্য খুব সাধারণ একটি জীবিকা। সম্ভবত এক্ষেত্রে অনিচ্ছা সত্ত্বেও যৌনকর্মের পরিমাণ পতিতাবৃত্তির চেয়ে বেশি।
ঘৃণা তৈরি করলেই প্রচারণা বেশি সফল হয়।
.আমি কখনো নিজের বিশ্বাসের জন্য প্রাণ দেবো না, কারণ সেটি ভুল হতে পারে।
বিশ্বের মূল সমস্যা হচ্ছে বোকা এবং গোঁড়া লোকেরা সব সময় নিশ্চিত থাকে আর জ্ঞানী লোকেরা সব সময় সংশয়ে থাকে।
Patriotism is the willingness to kill and be killed for trivial reasons.
বিবাহ হচ্ছে নারীর জন্য খুব সাধারণ একটি জীবিকা। সম্ভবত এক্ষেত্রে অনিচ্ছা সত্ত্বেও যৌনকর্মের পরিমাণ পতিতাবৃত্তির চেয়ে বেশি।
Marriage is for women the commonest mode of livelihood, and the total amount of undesired sex endured by women is probably greater in marriage than in prostitution.
বারট্রান্ড রাসেল (Bertrand Russell)
ঘৃণা তৈরি করলেই প্রচারণা বেশি সফল হয়।
.আমি কখনো নিজের বিশ্বাসের জন্য প্রাণ দেবো না, কারণ সেটি ভুল হতে পারে।
I would never die for my beliefs because I might be wrong.
বিশ্বের মূল সমস্যা হচ্ছে বোকা এবং গোঁড়া লোকেরা সব সময় নিশ্চিত থাকে আর জ্ঞানী লোকেরা সব সময় সংশয়ে থাকে।
The whole problem with the world is that fools and fanatics are always so certain of themselves, and wise people so full of doubts.
The whole problem with the world is that fools and fanatics are always so certain of themselves, but wiser people so full of doubts.
The trouble with the world is that the stupid are cocksure and the intelligent are full of doubt.
War does not determine who is right - only who is left.
The good life is one inspired by love and guided by knowledge.
Most people would sooner die than think; in fact, they do so.
To be without some of the things you want is an indispensable part of happiness.
To conquer fear is the beginning of wisdom.
Do not fear to be eccentric in opinion, for every opinion now accepted was once eccentric.
I would never die for my beliefs because I might be wrong.
There is much pleasure to be gained from useless knowledge.
No comments:
Post a Comment
Thank you for your message, I see all your messages, it is not possible to reply many times due to busyness, I hope I will reply to everyone in time, thank you for being with me.